Sunday, December 6, 2009
Saturday, October 24, 2009
Sukanta Bhattachariya ( সুকান্ত ভট্টাচার্য )
সুকান্ত ভট্টাচার্য (১৫ই আগস্ট, ১৯২৬ - ১৩ই মে, ১৯৪৭) বাংলা সাহিত্যের মার্কসবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী এবং প্রগতিশীল চেতনার অধিকারী তরুণ কবি। পিতা-নিবারন ভট্টাচার্য, মা-সুনীতি দেবী। ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট মাতামহের ৪৩, মহিম হালদার স্ট্রীটের বাড়ীতে তার জন্ম।। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল ফরিদপুর জেলার কোটালিপাড়ায়। পিতা নিবারণচন্দ্র ভট্টাচার্য কলকাতায় পুস্তক ব্যবসায় করতেন। সুকান্তের বাল্যশিক্ষা শুরু হয় কলকাতার কমলা বিদ্যামন্দিরে; পরে তিনি বেলেঘাটা দেশবন্ধু হাইস্কুলে ভর্তি হন এবং ১৯৪৫ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হন। এ সময় ছাত্র আন্দোলন ও বামপন্থী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়ায় তাঁর আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সমাপ্তি ঘটে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, তেতাল্লিশের মম্বন্তর, ফ্যাসিবাদী আগ্রাসন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রভৃতির বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেন। ১৯৪৪ সালে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন। সেই বছর আকাল নামক একটি সংকলনগ্রন্থ তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়। সুকান্ত কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা দৈনিক স্বাধীনতার (১৯৪৫) ‘কিশোর সভা’ বিভাগ সম্পাদনা করতেন। মার্কসবাদী চেতনায় আস্থাশীল কবি হিসেবে সুকান্ত কবিতা লিখে বাংলা সাহিত্যে স্বতন্ত্র স্থান করে নেন। তাঁর রচনাবলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো: ছাড়পত্র (১৯৪৭), পূর্বাভাস (১৯৫০), মিঠেকড়া (১৯৫১), অভিযান (১৯৫৩), ঘুম নেই (১৯৫৪), হরতাল (১৯৬২), গীতিগুচ্ছ (১৯৬৫) প্রভৃতি। পরবর্তীকালে উভয় বাংলা থেকে সুকান্ত সমগ্র নামে তাঁর রচনাবলি প্রকাশিত হয়। সুকান্ত ফ্যাসিবাদবিরোধী লেখক ও শিল্পিসঙ্ঘের পক্ষে আকাল (১৯৪৪) নামে একটি কাব্যগ্রন্থ সম্পাদনা করেন।
সুকান্তের সাহিত্য-সাধনার মূল ক্ষেত্র ছিল কবিতা। সাধারণ মানুষের জীবনসংগ্রাম, যন্ত্রণা ও বিক্ষোভ তাঁর কবিতার প্রধান বিষয়বস্তু। তাঁর রচনাকর্মে গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাণীসহ শোষণহীন এক নতুন সমাজ গড়ার অঙ্গীকার উচ্চারিত হয়েছে। রবীন্দ্রোত্তর বাংলা কবিতার বৈপ্লবিক ভাবধারাটি যাঁদের সৃষ্টিশীল রচনায় সমৃদ্ধ হয়েছে, সুকান্ত তাঁদের অন্যতম। তাঁর কবিতার ছন্দ, ভাষা, রচনাশৈলী এত স্বচ্ছন্দ, বলিষ্ঠ ও নিখুঁত যে, তাঁর বয়সের বিবেচনায় এরূপ রচনা বিস্ময়কর ও অসাধারণ বলে মনে হয়। পার্টি ও সংগঠনের কাজে অত্যধিক পরিশ্রমের ফলে দুরারোগ্য ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ১৯৪৭ সালের ১৩ মে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
গ্রণ্থ তালিকা
বোধন
সুকান্ত ভট্টাচার্য
হে মহামানব, একবার এসো ফিরে
শুধু একবার চোখ মেলো এই গ্রাম নগরের ভিড়ে,
এখানে মৃত্যু হানা দেয় বারবার;
লোকচক্ষুর আড়ালে এখানে জমেছে অন্ধকার।
এই যে আকাশ, দিগন্ত, মাঠ স্বপ্নে সবুজ মাটি
নীরবে মৃত্যু গেড়েছে এখানে ঘাঁটি;
কোথাও নেইকো পার
মারী ও মড়ক, মন্বন্তর, ঘন ঘন বন্যার
আঘাতে আঘাতে ছিন্নভিন্ন ভাঙা নৌকার পাল,
এখানে চরম দুঃখ কেটেছে সর্বনাশের খাল,
ভাঙা ঘর, ফাঁকা ভিটেতে জমেছে নির্জনতার কালো,
হে মহামানব, এখানে শুকনো পাতায় আগুন জ্বালো।
ব্যাহত জীবনযাত্রা, চুপি চুপি কান্না বও বুকে,
হে নীড়-বিহারী সঙ্গী! আজ শুধু মনে মনে ধুঁকে
ভেবেছ সংসারসিন্ধু কোনোমতে হয়ে যাবে পার
পায়ে পায়ে বাধা ঠেলে। তবু আজো বিস্ময় আমার-
ধূর্ত, প্রবঞ্চক যারা কেড়েছে মুখের শেষ গ্রাস
তাদের করেছ মা, ডেকেছ নিজের সর্বনাশ।
তোমার ক্ষেতের শস্য
চুরি ক'রে যারা গুপ্তকক্ষতে জমায়
তাদেরি দু'পায়ে প্রাণ ঢেলে দিলে দুঃসহ ক্ষমায়;
লোভের পাপের দুর্গ গম্বুজ ও প্রাসাদে মিনারে
তুমি যে পেতেছ হাত; আজ মাথা ঠুকে বারে বারে
অভিশাপ দাও যদি, বারংবার হবে তা নিস্ফল-
তোমার অন্যায়ে জেনো এ অন্যায় হয়েছে প্রবল।
তুমি তো প্রহর গোনো,
তারা মুদ্রা গোনে কোটি কোটি,
তাদের ভাণ্ডার পূর্ণ; শূন্য মাঠে কঙ্কাল-করোটি
তোমাকে বিদ্রূপ করে, হাতছানি দিয়ে কাছে ডাকে-
কুজ্ঝটি তোমার চোখে, তুমি ঘুরে ফেরো দুর্বিপাকে।
পৃথিবী উদাস, শোনো হে দুনিয়াদার!
সামনে দাঁড়িয়ে মৃত্যু-কালো পাহাড়
দগ্ধ হৃদয়ে যদিও ফেরাও ঘাড়
সামনে পেছনে কোথাও পাবে না পার:
কি করে খুলবে মৃত্যু-ঠেকানো দ্বার-
এই মুহূর্তে জবাব দেবে কি তার?
লক্ষ লক্ষ প্রাণের দাম
অনেক দিয়েছি; উজাড় গ্রাম।
সুদ ও আসলে আজকে তাই
যুদ্ধ শেষের প্রাপ্য চাই।
কৃপণ পৃথিবী, লোভের অস্ত্র
দিয়ে কেড়ে নেয় অন্নবস্ত্র,
লোলুপ রসনা মেলা পৃথিবীতে
বাড়াও ও-হাত তাকে ছিঁড়ে নিতে।
লোভের মাথায় পদাঘাত হানো-
আনো, রক্তের ভাগীরথী আনো।
দৈত্যরাজের যত অনুচর
মৃত্যুর ফাঁদ পাতে পর পর;
মেলো চোখ আজ ভাঙো সে ফাঁদ-
হাঁকো দিকে দিকে সিংহনাদ।
তোমার ফসল, তোমার মাটি
তাদের জীয়ন ও মরণকাঠি
তোমার চেতনা চালিত হাতে।
এখনও কাঁপবে আশঙ্কাতে?
স্বদেশপ্রেমের ব্যাঙ্গমা পাখি
মারণমন্ত্র বলে, শোনো তা কি?
এখনো কি তুমি আমি স্বতন্ত্র?
করো আবৃত্তি, হাঁকো সে মন্ত্রঃ
শোন্ রে মালিক, শোন্ রে মজুতদার!
তোদের প্রাসাদে জমা হল কত মৃত মানুষের হাড়-
হিসাব কি দিবি তার?
প্রিয়াকে আমার কেড়েছিস তোরা,
ভেঙেছিস ঘরবাড়ি,
সে কথা কি আমি জীবনে মরণে
কখনো ভুলতে পারি?
আদিম হিংস্র মানবিকতার যদি আমি কেউ হই
স্বজনহারানো শ্মশানে তোদের
চিতা আমি তুলবই।
শোন্ রে মজুতদার,
ফসল ফলানো মাটিতে রোপণ
করব তোকে এবার।
তারপর বহুশত যুগ পরে
ভবিষ্যতের কোনো যাদুঘরে
নৃতত্ত্ববিদ্ হয়রান হয়ে মুছবে কপাল তার,
মজুতদার ও মানুষের হাড়ে মিল খুঁজে পাওয়া ভার।
তেরোশো সালের মধ্যবর্তী মালিক, মজুতদার
মানুষ ছিল কি? জবাব মেলে না তার।
আজ আর বিমূঢ় আস্ফালন নয়,
দিগন্তে প্রত্যাসন্ন সর্বনাশের ঝড়;
আজকের নৈঃশব্দ হোক যুদ্ধারম্ভের স্বীকৃতি।
দুহাতে বাজাও প্রতিশোদের উন্মত্ত দামামা,
প্রার্থনা করোঃ
হে জীবন, যে যুগ-সন্ধিকালের চেতনা-
আজকে শক্তি দাও, যুগ যুগ বাঞ্ছিত দুর্দমনীয় শক্তি,
প্রাণে আর মনে দাও শীতের শেষের
তুষার-গলানো উত্তাপ।
টুকরে টুকরো ক'রে ছেঁড়ো তোমার
অন্যায় আর ভীরুতার কলঙ্কিত কাহিনী।
শোষক আর শাসকের নিষ্ঠুর একতার বিরুদ্ধে
একত্রিত হোক আমাদের সংহতি।
তা যদি না হয় মাথার উপরে ভয়ঙ্কর
বিপদ নামুক, ঝড়ে বন্যায় ভাঙুক ঘর;
তা যদি না হয়, বুঝবো তুমি মানুষ নও-
গোপনে গোপনে দেশদ্রোহীর পতাকা বও।
ভারতবর্ষ মাটি দেয়নিকো, দেয় নি জল
দেয় নি তোমার মুখেতে অন্ন, বাহুতে বল
পূর্বপুরুষ অনুপস্থিত রক্তে, তাই
ভারতবর্ষে আজকে তোমার নেইকো ঠাঁই।।
Thursday, October 22, 2009
Wednesday, October 21, 2009
Rabindranath Tagore
- রবীন্দ্রনাথ তাঁর লেখনীতে বাঙালির জীবন যাপন, সংস্কৃতিকে যেমন তুলে ধরেছেন, তেমনি বাঙালির চিরদিনের হাসিকান্না, আনন্দ-বেদনারও রূপকার তিনি। জগতের সকল বিষয়কে তিনি তাঁর লেখায় ধারণ করেছেন। মানুষের এমন কোনো মানবিক অনুভূতি নেই যা রবীন্দ্রনাথের লেখায় পাওয়া যায় না। তাঁর সম্পর্কে কবি দীনেশ দাশ বলেছেন, ‘তোমার পায়ের পাতা সবখানে পাতা’। সভ্যতার সকল সংকটে রবীন্দ্রনাথ এক বিশাল সমাধান। অন্ধকারে এক বিরাট আলোর প্রদীপ। বাংলাভাষা ও সাহিত্যকে তিনি সারাজীবনের সাধনায় অসাধারণ রূপলাবণ্যমণ্ডিত করেছেন। অতুলনীয় ও সর্বতোমুখী প্রতিভা দিয়ে তিনি বাংলা সাহিত্যকে বিশ্ব মানে উন্নীত করে বাঙালিকে এক বিশাল মর্যাদার আসনে নিয়ে গেছেন।
- বাংলা ভাষায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই সুদীর্ঘ সময়ের লেখা অথবা রবীন্দ্র রচনাবলী এখন ওয়েবসাইটে সহজলব্ধ। এই রবীন্দ্র রচনাবলীতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা অসংখ্য ছোট গল্প, গান, উপন্যাস, নাটক এবং প্রবন্ধ ও রম্যরচনা আছে, যেগুলি পূর্বেই বিশ্বভারতী ও সাহিত্য আকাদেমি থেকে পুস্তক হিসাবে বহু খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে।
- http://www.ganguly.de/Tagore
Rabindranath Tagore was awarded the Nobel Prize for Literature
in 1913 by the Nobel Committee "because of his profoundly sensitive
fresh and beautiful verse, by which, with consummate skill, he has
made his poetic thought, expressed in his own English words, apart
of the literature of the West."
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কবিতা সংকলন সমূহ
Tuesday, October 20, 2009
Subscribe to:
Posts (Atom)