Sunday, July 3, 2011

মোবাইল ব্যবহারে সর্তক হোন


মোবাইল ব্যবহারে সর্তক হোন

গণশক্তির প্রতিবেদন

মোবাইলে আপনি কতক্ষণ কথা বলেন। আধ ঘণ্টা না তারও বেশি ? যদি বেশি সময় কথা বলেন তাহলে এখনই অভ্যাস বদলে ফেলুন। আপনার মোবাইল সেটটি যতই দামী আর আধুনিক হোক না কেন তা কিন্তু আপনার ক্ষতিই করে দেবে। আর সেই ক্ষতি সামলাতে আপনি উজাড় হয়ে যেতেও পারেন।

মোবাইলে বেশি কথা বললে টিউমার হয়। রোগ-বালাই বাড়তে থাকে। এই নিয়ে তর্ক-বির্তকের শেষ নেই। ভারতে ইতোমধ্যে দুই রাজ্যের হাইকোর্ট এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করে মোবাইলের ক্ষতি নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছে। এর মধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু পরিষ্কার জানিয়ে দিলো আর আলোচনা বা বিতর্ক করে লাভ নেই। মোবাইলের তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ দারুণ ক্ষতিকর। ১০বছর ধরে প্রতিদিন আধঘণ্টা (৩০মিনিট) ধরে কথা বলে চললে মস্তিষ্কে টিউমার হতে পারে। হতে পারে মস্তিষ্ক ক্যান্সারও। তরঙ্গায়িত ঐ ক্যান্সারের নাম গ্লিয়োমা।

মোবাইল তরঙ্গের ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু ১৪টি দেশের ৩১জন বিশেষজ্ঞকে নিয়ে একটি বিশেষ কমিটি তৈরি করেছিলো। ঐ কমিটির নাম দেওয়া হয়েছে ইন্টারন্যাশানাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার বা আই এ আর সি। এই কমিটি ৮দিন ধরে টানা একটি কর্মসূচী নিয়েছিলো। তা শেষ হয়েছে ৩০শে মে। এরপরেই ফ্রান্সের লিঁও শহরে ১লা জুন রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলেন করে বিশেষজ্ঞদের সমীক্ষা ও গবেষণার ভিত্তিতে তৈরি রিপোর্টের সারমর্ম প্রকাশ করলো। হু’র তরফে পরিষ্কার বলে দেওয়া হলো – হ্যাঁ, অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার ক্ষতিকারক। মোবাইলের তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ ভয়াবহ। এটি ক্যান্সার রোগ ঘটাতে পারে। অর্থাৎ মোবাইল তরঙ্গ ‘কার্সিনোজেনিক’।

হু অবশ্য মোবাইলের ক্ষতিকর দিকের সন্ধান দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। জানিয়েছে কিছু সহজ বাঁচার উপায়ও। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মোবাইল কানে চেপে কথা বলার অভ্যাস ত্যাগ করাটা প্রথম দরকার। পারলে ‘হ্যান্ডস ফ্রি গ্যাজেট’ বা কানে গোজা যন্ত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। স্পিকার ফোনে কথা বলার অভ্যাসটা বরঞ্চ ভালো। পারতপক্ষে বদ্ধ ঘরে বসে মোবাইলে দীর্ঘক্ষণ কথা বলবেন না। মেসেজ করলে কাজ মিটে গেলে মোবাইলে কথা না বলে মেসেজ লিখে পাঠিয়ে দিন। ফোনে ব্লু-টুথ থাকলেও সারাদিন এটাকে চালু রাখবেন না। এতদিন মোবাইল টাওয়ার নিয়ে অসংখ্য গবেষণা আর সমীক্ষা প্রকাশিত হলেও মোবাইল সেট নিয়ে হু’র এই বিবৃতি সত্যিই চিন্তার।

প্রকৃতি কিন্তু আপনার সেবায়

আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। পরিবেশ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করার দিন। পরিবেশ আন্দোলনের রূপরেখা টানার দিনও ৫ই জুন। বিজ্ঞান গবেষক থেকে সাধারণ মানুষ প্রত্যেকের কাছে এদিনটি দারুণ তাৎপর্যপূর্ণ। ব্যস্ততা আর শত কাজের মধ্যে পরিবেশকে একটু কাছ থেকে দেখার, একটু পরখ করার দিনও ৫ই জুন। প্রতিবছরের মতো এবছরকেও রাষ্ট্রসংঘ নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে যাচাই করে নিয়েছে। তাই এবছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের মূল ভাবনা — বনাঞ্চল : প্রকৃতি আপনার সেবায়। পরিবে-প্রকৃতির অনন্য অবদানের কথা আবারও মানুষকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যই এবারে রাষ্ট্রসংঘের তরফে এই স্লোগান মিলেছে। ২০১১ সালকে অবশ্য আগেই রাষ্ট্রসংঘ আন্তর্জাতিক বনাঞ্চল বর্ষ বলে ঘোষণা করেছে। সেই দিক থেকেও এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের ভাবনাটি বিশেষ অর্থবহ।

ভারতে জনসংখ্যা আজ ১২০কোটিতে ঠেকেছে। প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এই সংখ্যা। বসবাস আর খাদ্যের সঙ্কুলান করতে মানুষকে ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় বনমুখী হতেই হচ্ছে। চাষের জমি ক্রমশ খেয়ে নিচ্ছে শিল্প আর আবাসন। তাই বনকে দখল করে নিয়ে বাড়াতে হচ্ছে কৃষিজমি। বেঁচে থাকার তাগিদে। মুখে খাবার জোগানের আশায়। কিন্তু বনাঞ্চলের সীমানা কমতে থাকলে তো সমূহ বিপদ। বন্যপ্রাণ হটিয়ে, গাছ কেটে জমি কেড়ে নিতে থাকলে একদিন এই পৃথিবী আর মানুষের বাসযোগ্য থাকবে না। খাদ্য-খাদকের সেই পুরানো শৃঙ্খল ভেঙে পড়বে। তাই স্থিতিশীল উন্নয়নের জন্য ঠিক কতটা বনাঞ্চলকে নেওয়া যেতে পারে, কতটা না রাখলে চলবেই না তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। শুধু সরকারী প্রকল্প আর আইন দিয়ে চলবে না। চাই সাধারণ মানুষের যোগদান।

দেশের বিভিন্ন রাজ্যে যে হাতে নগরায়ন বাড়ছে তাতে গ্রাম অনেকদিন আগেই শহর হয়ে গেছে। গ্রামীণ এলাকার বাইরে থাকা বনাঞ্চলে যদি চলে যায় তাহলে বাস্তুতন্ত্রই ভেঙে পড়বে। ভেঙে যাবে খাদ্য-খাদকের মৌলিক সম্পর্ক। বনসৃজন প্রকল্প আমজনতার সঙ্গে সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়। এরমধ্যে রয়েছে বাড়তি চাপ প্রকৃতির। ভূমিকম্প, সামুদ্রিক ঝড়ের মতো প্রাকৃতিক বৈপরীত্যের বিরুদ্ধে গিয়ে পরিবেশের সুস্বাস্থ্য কামনা করাটা দারুণ কঠিন কাজ। তবে সেটাই করতে হবে। তা না হলে সুন্দরবনের বিশ্বের অনন্য ভৌগোলিক বৈচিত্র্যকে আর রক্ষা করা যাবে না। বিশ্ব পরিবেশ দিবস-বিশেষ এইদিনেই আমাদের সংকল্প নিতে হবে। এই দিনটি পালনে অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে এগিয়ে এসেছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ। শহর কলকাতার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা সদরে করা হচ্ছে রকমারী শোভাযাত্রা আর পরিবেশ সচেতনতা শিবির।

No comments:

Post a Comment